চিকন থেকে মোটা হওয়ার উপায় জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি চিকন থেকে মোটা হওয়ার উপায় জানতে চান? দিন দিন রোগাটে ভাব আসছে আপনার শরীরে? চিকন হওয়া নিয়ে খুব চিন্তিত আপনি? তাহলে আজকের এই পোষ্টটি আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে চিকন থেকে মোটা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এছাড়াও কিছু গোপন টিপস দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ লেখকের পরামর্শ মূলক মন্তব্য পেশ করা হয়েছে।
পৃথিবীতে সমস্যা যেমন আছে সমাধানও তেমন আছে। আপনার সমস্যার সমাধান পেতে মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়তে থাকুন । আশা করছি আপনি পোস্টটি পড়ে বেশ উপকৃত হবেন।

পোস্ট সূচিপত্র: চিকন থেকে মোটা হওয়ার উপায় জেনে নিন

ভূমিকা

পৃথিবীতে সব ধরনের মানুষই বসবাস করে। আপনি জানেন কি? একজন মানুষের ওজন যদি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম হয় তাহলে তাকে আন্ডার ওয়েটের সমস্যায় ভুগতে হয়। 

যারা এই ধরনের রোগে ভুগছেন তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম। প্রতিকূল পরিবেশে এই রোগীদের নানা কটু কথা শুনতে হয়। সব মিলিয়ে জীবন হতাশা পূর্ণ হয়ে যায়।শরীরে অতিরিক্ত রোগাটে ভাব থাকলে নিজেই নিজেকে আয়নার সামনে দেখতে ভালো লাগে না।
এমন কি পছন্দ হয় জামা কাপড় পড়লেও মানানসই হয় না। মনে হয় জামা কাপড় গুলো যেন হ্যাঙ্গারে ঝুলছে। তবে এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা নয়। মানে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে আজকের এই পোস্টে লিখা হয়েছে। এক কথায় ওজন বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে। সকল উপায় গুলো নিম্নে জেনে নিন:

ক্ল্যারিফায়েড বাটার

তাই অনেকেই জানি যে, দেহের ওজন বাড়িয়ে তুলতে ক্ল্যারিফায়েড বাটার খুব কার্যকরী। এটি শুধুই দেহের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে না শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করতে সাহায্য করে। নিম্নে উপকরণটি জেনে নিন:

উপকরণ
  • ক্ল্যারিফায়েড বাটার এক চামচ
  • চিনি এক চামচ
পদ্ধতি
  • ক্ল্যারিফায়েড বাটার ও চিনি দুটোই একসাথে মিশিয়ে নিন। এটি প্রতিদিন দিনে ও রাতে খাবার আধঘন্টা আগে খেয়ে নিন।

পিনাট বাটার

হাই ক্যালরিযুক্ত খাবার হচ্ছে পিনের বাটার। তাই প্রতিদিন একবার করে হলেও এটি খাবেন। আপনি নাস্তার সাথে বেশ খানিকটা পিনাট বা খেতে পারেন। তবে পরিমাণ মতো খাবেন কারণ ওজন বৃদ্ধিতে খুব তাড়াতাড়ি কাজ করে। যারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ওজন বাড়াতে চান তারা দেরি না করে আজই বাজার থেকে ক্রয় করুন পিনাট বাটার।

আলু

কমপ্লেক্স সুগার ও কার্বোহাইড্রেট এ ভরপুর একটি উপাদান হচ্ছে আলু। অন্যান্যদের মতো এই উপাদানটিও আপনার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে দুইবার সেদ্ধ আলু রাখুন খাবারে তালিকায়। এছাড়া নাস্তার তালিকায় আলু চিপস রাখতে পারেন আবার প্রিজার্ভ করে রেখেও খেতে পারেন। কমপক্ষে দুই মাস নিয়মিত এটি খেয়ে দেখতে পারেন। পার্থক্য আপনার চোখের নাগালে ধরা দিবে।

ডিম

ডিমে প্রোটিন ফ্যাট ও ক্যালোরি থাকে যা আমাদের দেহের জন্য খুব ভালো। তাই ওজন বৃদ্ধি করতে ডিম আমাদের কাছে ভরসা যোগ্য একটি খাবার। তবে ডিমের সঠিক নিয়ম জেনে খাবেন। কাঁচা ডিম একদমই খাবেন না। সেদ্ধ করা ডিমের সাদা অংশ খাবেন। 
প্রতিদিন অন্ততপক্ষে তিন থেকে চারটি ডিমের সাদা অংশ খাবেন। তাই দেরি না করে আজ থেকে ডিম খাওয়া শুরু করুন। এভাবে অন্ততপক্ষে দুই মাস খাবার তালিকায় ডিম রাখুন। অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।

স্ট্রেস থেকে মুক্তি

আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে গেছে স্ট্রেস। আর এটির ভয়াবহ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোগা হয়ে যাওয়া বা ওজন কমে যাওয়া। তাই ওজন বাড়ানোর ইচ্ছে থাকলে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে হবে। কাজেই জেনে নিন স্ট্রেস মুক্ত কিভাবে থাকবেন। 

প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ মিনিট সময় বের করুন মেডিটেশন করার জন্য। এতে করে মস্তিষ্ক রিল্যাক্স থাকে। এটিও যদি করতে না পারেন তাহলে দুপুরে দুই ঘণ্টা অন্ততপক্ষে নিরিবিলি বা মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ঘুমান। দেখবেন খুব জলদি স্ট্রেস মুক্ত হবেন।

নিজের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন

সবার আগে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি জানুন আপনার উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন কত হওয়া উচিত। এছাড়া বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই গাণিতিক পদ্ধতিতে আপনি আপনার শরীরের আদর্শ ওজন নির্ণয় করতে পারবেন। এছাড়াও একটি সহজ গোপনীয় টিপস রয়েছে। আপনার উচ্চতা যত সেন্টিমিটার হবে তা থেকে ১০০ বিয়োগ করুন। ফলাফল পেয়ে যাবেন। 
তবে কিলো গ্রামে পাবেন আপনার কাম্য ওজন। খুবই সহজ পদ্ধতি এটি। যেমন উদাহরণ স্বরূপ ধরুন: আপনার উচ্চতা ১৪২ সেন্টিমিটার তাহলে আপনার কাম্য ওজন হতে পারে অর্থাৎ ১৪২ থেকে ১০০ বাদ দিন। তাহলে যে সংখ্যাটি আসবে সেটি কেজিতে আসবে ৪২ কেজি। এবারে এ ওজন থেকে ছেলেদের জন্য ১০% এবং মেয়েদের জন্য ১৫% বাদ দিন। তাহলেই পেয়ে যাবেন আপনার আদর্শ ওজন।

ব্যায়াম

আপনার আমার বা অনেকের ধারণা মানুষ শুধু ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করে। পুষ্টিবিদদের মতে এটি একদমই ভুল ধারণা। ওজন কমানোর জন্য যেমন ব্যায়াম করা প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়াম করলে যা যা হয়:
  • ঘুম ভালো হয়
  • হজম প্রক্রিয়া বাড়ে।
  • ক্ষুধা বাড়ে
ওজন বাড়ানোর জন্য কেমন ব্যায়াম করবেন?
  • ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন
  • জিমে যেতে পারেন
  • ইয়োগা করতে পারেন
  • সাইক্লিং বা সাঁতার কাটতে পারেন

পরামর্শমূলক টিপস

ওজন কমাতে যতটা পরিশ্রম করা লাগে ওজন বৃদ্ধি করা ততটাই সহজ। তবে এর জন্য সঠিক ডায়েট চার্ট ফলো করতে হবে। আমাদের অনেকের মধ্যেই নানা প্রকার শারীরিক দুর্বলতা থাকে। যার জন্য রোগাটে দেখায় বা দেহের ওজন কমে যায়। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে দেওয়া চাট অনুযায়ী খাওয়া দাওয়া করা প্রয়োজন।

ওজন বৃদ্ধিকৃত যে কোনো ধরনের হেলথ ড্রিংকস বা প্রোটিন শেক সেবন করে আমরা মোটা হওয়ার পরিকল্পনা করি। তবে এটি ভুল ধারণা। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি বিপরীত হতে পারে। তাই হেলথ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। তাছাড়া ওজন বৃদ্ধিতে কিছু আদর্শ খাবার হচ্ছে খেজুর, কাজু বাদাম, কিসমিস, আমন্ড, ইত্যাদি যা আপনার মোটা হওয়ার ইচ্ছে পূরণ করবে। 

এগুলোতে ক্যালরির মাত্রা অনেকটাই বেশি। এই উপকরণ গুলি সকালের নাস্তার সাথে ১০-১২ টি করে মিশিয়ে খান। দিনে অন্ততপক্ষে তিনবার খাবেন তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়ার জন্য। এই উপকরণ গুলি রাতে ঘুমানোর সময় জলে ভিজিয়ে রাখুন। এটি সকালে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।  

লেখকের মন্তব্য

আশ্চর্য হলেও একথা সত্যি যে, আমাদের সমাজে পরনিন্দা সমালোচনা ও কটু কথার অভাব নেই। আর এ সমস্যাগুলো সম্মুখীন হতে যে নানারকম ভুল করে থাকি আমরা। যার ফলে আমরা আরো শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমন সমাজে বাড়তি ওজন থাকলে তাকে নানান কটু কথা শুনতে হয় এবং তাকে নিয়ে সমালোচনা তৈরি হয়। আশেপাশের মানুষ তাকে নিয়ে পরনিন্দা করে।

ঠিক তেমনি শরীরের রোগাটে ভাব থাকলেও তার বিপরীত কিছু হয় না। যেমন, শুটকি, বাসায় দুর্ভিক্ষ, বাসায় খেতে দেওয়া হয় না বা বাসার মানুষ খেতে দেয় না, অপুষ্টিতে ভুগছে, এ তো ফু দিলে উড়ে যাবে আরো ইত্যাদি। মানুষের এমন নেতিবাচক মন্তব্য জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এমনকি অনেকের। শুকনা বা রোগা চেহারা বলে বিয়েও হয় না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন